মানুষের শরীর নরম টিস্যু, পেশি ও হাড় দিয়ে গঠিত। ছোট্ট আঘাতেই যেখানে ত্বক কেটে রক্ত বের হয়, সেখানে আবার হাড় ভেঙে যাওয়া খুব স্বাভাবিক ঘটনা। তাই ভাবতেই অবাক লাগে—এই ভঙ্গুর দেহের মধ্যেই এমন একটি হাড় আছে, যা কংক্রিটের থেকেও শক্ত!
পূর্ণবয়স্ক মানুষের শরীরে মোট ২০৬টি হাড় রয়েছে। এর মধ্যেই লুকিয়ে আছে সবচেয়ে শক্ত ও সবচেয়ে লম্বা হাড়। স্কুলে আমরা শিখেছি, দেহের কাঠামো গঠনে হাড়ের ভূমিকা অপরিসীম। তবে সব হাড় সমান শক্ত নয়।
মানুষের উরুতে যে হাড়টি রয়েছে, তার নাম ফিমার (Femur)। এটি শুধু দেহের সবচেয়ে লম্বা হাড়ই নয়, একইসঙ্গে সবচেয়ে শক্তিশালী হাড়ও।ফিমার উরুর হাড়, যা মানুষের শরীরের প্রধান ভর বহন করে।এটি কংক্রিটের চেয়েও শক্ত।পরীক্ষায় প্রমাণিত হয়েছে, ফিমার কংক্রিটের ওপর চার গুণ বেশি চাপ সহ্য করতে পারে। তবুও সহজে ভাঙে না।
মহাভারতের কাহিনি অনেকেরই জানা। কুরুক্ষেত্র যুদ্ধে ভীমের গদাঘাতে দুর্যোধনের ঊরুভঙ্গ হয়েছিল। ভাবুন তো, এত শক্ত হাড় ভাঙতে হলে কতটা শক্তির প্রয়োজন ছিল! এ থেকেই বোঝা যায়, ফিমার হাড় ভাঙা কতটা কঠিন কাজ।
ফিমারের শক্তি আসে এর ঘন গঠন ও ভেতরের ক্যালসিয়াম জমাট থেকে। এটি শরীরের সবচেয়ে বেশি ওজন ও চাপ বহন করে, তাই প্রকৃতিগতভাবেই ফিমারকে অসাধারণ শক্তিশালী করে তৈরি করা হয়েছে।
মানুষের শরীর নরম ও ভঙ্গুর হলেও এর ভেতরে আছে এক আশ্চর্য শক্তি—ফিমার হাড়। এটি শুধু দেহকে সাপোর্টই দেয় না, বরং কংক্রিটের থেকেও বেশি চাপ সহ্য করতে পারে। তাই বলা যায়, মানুষের দেহের প্রকৃত শক্তির প্রতীক হলো এই উরুর ফিমার হাড়।