ওজন কমাতে চাইলে শুধু ডায়েট আর ব্যায়ামই নয়, সঠিক পানীয়ও হতে পারে আপনার গোপন হাতিয়ার। অনেকেই সকালেই খালি পেটে লেবু জল বা বিভিন্ন ডিটক্স ড্রিংক পান করেন। কিন্তু জানেন কি, রাতে ডিনার শেষে কিছু বিশেষ পানীয় খেলে মেদ ঝরার গতি আরও বেড়ে যায়?
একজন ফিটনেস প্রশিক্ষক জানিয়েছেন, নিয়মিত ডিনারের পর এই পানীয়গুলো খেয়ে তিনি মাত্র চার মাসে কমিয়েছেন প্রায় ২৫ কেজি ওজন। শুনতে অবিশ্বাস্য মনে হলেও, বিজ্ঞানও বলছে এই পানীয়গুলো হজমশক্তি বাড়ায়, বিপাকক্রিয়া ত্বরান্বিত করে এবং শরীর থেকে চর্বি ঝরতে সাহায্য করে।
চলুন জেনে নেওয়া যাক কোন কোন পানীয় ডিনারের পর খেলে আপনার ওজন কমার যাত্রা সহজ হয়ে উঠতে পারে।
লেবু জল অনেকেই সকালে খালি পেটে খান। কিন্তু রাতে, ঘুমানোর অন্তত ৩০ মিনিট আগে ঈষদুষ্ণ লেবু জল খেলে এর উপকারিতা আরও বেড়ে যায়। লেবুতে থাকা পেকটিন ফাইবার ক্ষুধা কমায় এবং দীর্ঘ সময় পেট ভরা রাখে। এছাড়া শরীর থেকে টক্সিন বের করতে সাহায্য করে, ফলে ওজন কমানোর প্রক্রিয়া দ্রুত হয়।
এক গ্লাস হালকা গরম জলে আধা লেবুর রস মিশিয়ে খেয়ে দেখুন। কয়েকদিনের মধ্যে পার্থক্য টের পাবেন।
দারুচিনি শুধু রান্নার স্বাদ বাড়ায় না, এটি মেদ কমানোর অসাধারণ এক প্রাকৃতিক উপাদান। দারুচিনি রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে, ফলে শরীরে অতিরিক্ত চর্বি জমতে পারে না।
ডিনারের পর এক কাপ দারুচিনি চা পান করলে ঘুমের মধ্যেই মেটাবলিজম সক্রিয় থাকে। এতে ফ্যাট গলে যায় দ্রুত। এছাড়া ফাইবার সমৃদ্ধ হওয়ায় ক্ষুধাও কম লাগে।
ঘুমানোর অন্তত আধঘণ্টা আগে দারুচিনির চা খাওয়ার অভ্যাস তৈরি করুন।
আদা চায়ের নাম শুনলেই মনে হয় শীতে ঠান্ডা লাগা দূর করতে। কিন্তু এর আসল গুণ অনেক গভীরে। আদা হজমশক্তি উন্নত করে, বদহজম সারায় এবং শরীরে তাপমাত্রা বাড়িয়ে ফ্যাট বার্নে সাহায্য করে।
ডিনারের পর এক কাপ আদা চা শুধু ঘুমকে শান্তিময় করে না, পাশাপাশি খিদে নিয়ন্ত্রণেও সাহায্য করে। এতে অতিরিক্ত খাবার খাওয়ার প্রবণতা কমে যায়।
ওজন কমানোর পানীয়র তালিকায় আপেল সিডার ভিনেগারের নাম থাকবে না, এমনটা প্রায় অসম্ভব। এক গ্লাস গরম জলে এক থেকে দুই চামচ আপেল সিডার ভিনেগার মিশিয়ে পান করলে ক্ষুধা কমে যায় এবং মেটাবলিজম ত্বরান্বিত হয়।
এতে থাকা অ্যাসিটিক অ্যাসিড শরীরকে চর্বি পোড়াতে সহায়তা করে। নিয়মিত খেলে পেটের মেদ কমাতে বেশ কার্যকরী।
ক্যামোমাইল হল এক ধরনের ভেষজ ফুল, যার থেকে তৈরি চা শুধু স্ট্রেস কমায় না, ওজন কমাতেও সাহায্য করে। এর মধ্যে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি উপাদান শরীরকে শান্ত করে, হজমে সাহায্য করে এবং ফ্যাট বার্নের প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করে।
যারা ঘুমের সমস্যা ভোগেন, তাদের জন্য ক্যামোমাইল টি হতে পারে ডাবল বেনিফিট – ভালো ঘুম আর দ্রুত মেদ ঝরা।
ওজন কমাতে চাইলে শুধু ব্যায়াম বা ডায়েট নয়, বরং জীবনযাত্রায় ছোট কিছু পরিবর্তনই বড় ভূমিকা রাখতে পারে। ডিনারের পর এই পাঁচটি পানীয় নিয়মিত পান করলে শুধু শরীর হালকা লাগবে না, বরং ঘুমও হবে আরামদায়ক।
তবে মনে রাখবেন, কোনো কিছুই জাদুর মতো কাজ করবে না যদি না আপনি নিয়মিত ব্যায়াম ও সঠিক খাদ্যাভ্যাস বজায় রাখেন। তাই ফিট থাকতে আজ থেকেই শুরু করুন – ব্যায়াম করুন, সঠিক খাবার খান আর ডিনারের পর চুমুক দিন এই স্বাস্থ্যকর পানীয়গুলোতে।