ভারতীয় হকির স্বর্ণালী অধ্যায়ে যোগ হলো নতুন পালক। দক্ষিণ কোরিয়াকে ৪-১ গোলে হারিয়ে ভারত চতুর্থবারের মতো হকি এশিয়া কাপ চ্যাম্পিয়ন হলো। এই জয়ের ফলে সরাসরি হকি বিশ্বকাপে খেলার যোগ্যতাও অর্জন করল হরমনপ্রীত সিংয়ের নেতৃত্বাধীন দল।
পুরো টুর্নামেন্টে এক ম্যাচও হারেনি ভারত। গ্রুপ পর্ব থেকে শুরু করে ফাইনাল পর্যন্ত সব ম্যাচে তারা দেখিয়েছে আধিপত্য। চিন, জাপান ও কাজাখস্তানকে সহজেই হারিয়েছে দলটি। সুপার ফোরে যদিও দক্ষিণ কোরিয়ার বিপক্ষে ম্যাচ ড্র হয়েছিল, কিন্তু ফাইনালে সেই আক্ষেপ উড়িয়ে দিলেন হরমনপ্রীতরা।
বিহারের রাজগীরের গ্যালারি ভর্তি দর্শক ফাইনালের শুরু থেকেই “ইন্ডিয়া, ইন্ডিয়া” ধ্বনিতে মুখরিত হয়ে ওঠে। ম্যাচ শুরুর মাত্র ৩৪ সেকেন্ডের মধ্যে গোল করেন সুখজিৎ সিং। আগের ম্যাচে চিনকে ৭-০ গোলে হারানো ভারতের আত্মবিশ্বাসে তখন আগুন জ্বলছিল। প্রথমার্ধেই দিলপ্রীত সিং যোগ করেন আরও একটি গোল। বিরতির আগে স্কোরবোর্ডে ভারত এগিয়ে যায় ২-০ গোলে।
বিরতির পর দক্ষিণ কোরিয়া আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠে। কয়েকটি পেনাল্টি কর্নারের সুযোগ পেলেও কাজে লাগাতে পারেনি তারা। উল্টো তৃতীয় কোয়ার্টারের শেষদিকে ম্যাচের রাশ পুরোপুরি চলে আসে ভারতের হাতে। ৫০ মিনিটে দিলপ্রীত সিং করেন নিজের দ্বিতীয় গোল। এরপর পেনাল্টি কর্নার থেকে অমিত রোহিদাসের দুর্দান্ত শটে ভারত পায় চতুর্থ গোল। হরমনপ্রীতের বদলে শট নেওয়ার কৌশল সবাইকে চমকে দেয়।
শেষ কোয়ার্টারে দক্ষিণ কোরিয়া একটি গোল শোধ দিলেও ব্যবধান কমাতে পারেনি। ম্যাচ শেষ হয় ভারতের ৪-১ গোলে জয়ে। এশিয়া কাপে এটাই ভারতের চতুর্থ শিরোপা জয়, যা প্রমাণ করে মহাদেশীয় আসরে এখনো ভারতই সবচেয়ে বড় শক্তি।
এশিয়া কাপের ট্রফির পাশাপাশি ভারত সরাসরি হকি বিশ্বকাপের টিকিটও নিশ্চিত করল। টুর্নামেন্টে দলের ধারাবাহিকতা, আক্রমণভাগের তেজ ও রক্ষণভাগের দৃঢ়তা ভারতীয় হকিকে ফের শীর্ষে নিয়ে গেছে।
ভারতের এই জয় শুধু একটি ট্রফি জয় নয়, বরং হকির প্রতি নতুন প্রজন্মের আগ্রহ আরও বাড়িয়ে দেবে। দিলপ্রীত, সুখজিৎ, অমিতদের পারফরম্যান্স দেখিয়েছে—ভারতীয় হকি আবারও বিশ্বমঞ্চে বড় চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিতে প্রস্তুত।