মানুষের দৈনন্দিন জীবনে অনেক নিয়ম, বিশ্বাস ও কুসংস্কার প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে চলে আসছে। এর মধ্যে অন্যতম হলো সূর্যাস্তের পর চুল বা নখ কাটার নিয়ম। অনেকের মতে, সন্ধ্যার পর এ ধরনের কাজ অশুভ শক্তিকে আমন্ত্রণ জানায়। যদিও বৈজ্ঞানিকভাবে এর কোনও প্রমাণ নেই, তবুও জ্যোতিষশাস্ত্র, পুরাণ এবং লোকাচারে এ বিষয়ে নানা ব্যাখ্যা পাওয়া যায়।
জ্যোতিষশাস্ত্রে সূর্যকে জীবনীশক্তি, আলো ও ইতিবাচক শক্তির প্রতীক ধরা হয়। সূর্য ডুবে গেলে অন্ধকারের প্রতীক রাহু-কেতু বা অশুভ শক্তি সক্রিয় হয় বলে ধারণা করা হয়। তাই এই সময়ে শরীরের কোনও অংশ, যেমন চুল বা নখ কাটা, শুভ নয় বলে বিশ্বাস করেন অনেকে।
১. অশুভ শক্তির প্রভাব বৃদ্ধি
বিশ্বাস করা হয়, সূর্যাস্তের পর চুল কাটলে পরিবারে অশান্তি, অমঙ্গল কিংবা অর্থনৈতিক ক্ষতি হতে পারে।
২. আয়ু ও সৌভাগ্যে বাধা
শাস্ত্রে বলা হয়েছে, সন্ধ্যার পর চুল বা নখ কাটলে মানুষের আয়ু হ্রাস পায় এবং ভাগ্য ব্যাহত হয়।
৩. পূর্বপুরুষদের আশীর্বাদ হ্রাস
লোককথায় বলা হয়, সূর্যাস্তের পর এ ধরনের কাজ করলে পিতৃদোষ দেখা দিতে পারে এবং পূর্বপুরুষের আশীর্বাদ কমে যায়।
যারা এই বিশ্বাস মানেন, তারা সূর্যাস্তের পর চুল কাটাকে এড়িয়ে চলেন। তবে আধুনিক বিজ্ঞান বলছে, দিনের যেকোনো সময় চুল বা নখ কাটলে শরীর বা ভাগ্যের উপর কোনো ক্ষতিকর প্রভাব পড়ে না। এটি কেবল একটি প্রাচীন প্রথা, যা সমাজ ও সংস্কৃতির অংশ হয়ে টিকে আছে।
সংস্কৃতি ও পারিবারিক ঐতিহ্যের কারণে। অশুভ শক্তির ভয়ে। পূর্বপুরুষদের প্রথা মানার প্রবণতায়।
সূর্যাস্তের পর চুল কাটা নিয়ে নানা মত রয়েছে। কেউ এটিকে কুসংস্কার বলে মনে করেন, আবার কেউ ধর্মীয় বিশ্বাসের অংশ হিসেবে মেনে চলেন। বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিকোণ থেকে এটি ক্ষতিকর নয়। তবে সাংস্কৃতিক দিক থেকে এখনও অনেকেই এই নিয়ম পালন করেন।
👉 তাই বলা যায়, সূর্যাস্তের পর চুল কাটা আসলে বিশ্বাস ও ঐতিহ্যের বিষয়, যা মানা বা না মানা সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত।