আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) আর ব্যবহার করা হবে না। পরিবর্তে দীর্ঘদিন পর ভোটারদের হাতে ফিরিয়ে দেওয়া হচ্ছে ‘না’ ভোটের অধিকার। সোমবার (১১ আগস্ট) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে মুলতবি কমিশন সভা শেষে এই সিদ্ধান্তের ঘোষণা দেন নির্বাচন কমিশনার আবুল ফজল মোহাম্মদ সানাউল্লাহ।
নির্বাচন কমিশনার জানান, গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) ২০২৫-এর খসড়া চূড়ান্ত হয়েছে। এর আওতায় ইভিএম প্রকল্প সম্পূর্ণভাবে বাতিল করা হয়েছে। নতুন নিয়মে, যদি কোনো আসনে মাত্র একজন প্রার্থী থাকেন, তবে তাকে স্বয়ংক্রিয়ভাবে বিজয়ী ঘোষণা করা হবে না। বরং তাকে ‘না’ ভোটের মুখোমুখি হতে হবে। যদি ‘না’ ভোটের সংখ্যা বেশি হয়, তবে সেই আসনে পুনরায় ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।
আগে সমান ভোট পেলে বিজয়ী নির্ধারণে লটারির প্রথা চালু ছিল। কিন্তু নতুন বিধানে এই পদ্ধতি বাদ দিয়ে পুনঃনির্বাচন বাধ্যতামূলক করা হয়েছে, যাতে ভোটের ফলাফল আরও স্বচ্ছ ও গণতান্ত্রিক হয়।
নতুন বিধিমালায় প্রার্থীদের হলফনামা সংক্রান্ত নিয়ম আরও কঠোর করা হয়েছে। যদি নির্বাচনের পর পাঁচ বছরের মধ্যে হলফনামায় প্রদত্ত তথ্য মিথ্যা প্রমাণিত হয়, নির্বাচন কমিশন প্রয়োজনে ওই প্রার্থীর সদস্যপদ বাতিল করতে পারবে। এই পদক্ষেপের লক্ষ্য হলো প্রার্থীদের স্বচ্ছতা ও দায়বদ্ধতা নিশ্চিত করা।
প্রার্থীরা ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান থেকে সর্বোচ্চ ৫০ লাখ টাকা পর্যন্ত অনুদান নিতে পারবেন। তবে অনুদান গ্রহণ প্রক্রিয়া অবশ্যই ব্যাংকের মাধ্যমে সম্পন্ন করতে হবে, যাতে অর্থের উৎস স্বচ্ছ থাকে এবং অবৈধ লেনদেন প্রতিরোধ করা যায়।
নতুন বিধানে বলা হয়েছে, জোটবদ্ধভাবে নির্বাচন করলেও প্রার্থীদের দলীয় প্রতীকেই ভোট করতে হবে। এর পাশাপাশি নতুন রাজনৈতিক দল নিবন্ধনের ক্ষেত্রেও পরিবর্তন এসেছে। বর্তমানে নিবন্ধনের জন্য আবেদন করা ৮৪টি নতুন দলের মধ্যে ২২টি দল বিবেচনায় রয়েছে, যাদের মাঠপর্যায়ে যাচাই-বাছাই চলছে।
নির্বাচন কমিশন জানায়, ৮৩টি সংসদীয় আসনের সীমানা নির্ধারণ নিয়ে আপত্তি পাওয়া গেছে। এসব আপত্তি পর্যালোচনা করে প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে, যাতে নির্বাচনী এলাকায় সঠিক প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত হয়।