ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে আবারও উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্স (বিএসএফ) দাবি করেছে, বাংলাদেশের এক সিনিয়র পুলিশ কর্মকর্তাকে তারা আটক করেছে। এই ঘটনাকে ঘিরে দুই দেশের সীমান্ত পরিস্থিতি আবারও আলোচনায় এসেছে।
ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের উত্তর চব্বিশ পরগনা জেলার হাকিমপুর সীমান্ত চৌকি এলাকায় শনিবার সন্ধ্যায় এই ঘটনাটি ঘটে। স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৬টা থেকে ৭টার মধ্যে ওই কর্মকর্তাকে আটক করা হয় বলে জানিয়েছে বিএসএফ।
বিএসএফের পক্ষ থেকে জানানো হয়, আটক ব্যক্তির কাছে একটি বাংলাদেশ পুলিশের অফিসিয়াল পরিচয়পত্র পাওয়া গেছে। সীমান্তের কাঁটাতারবিহীন অংশ দিয়ে প্রবেশের সময় তার আচরণ সন্দেহজনক মনে হওয়ায় বিএসএফ সদস্যরা তৎপর হয়ে ওঠেন। পরবর্তীতে তাকে পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
বিএসএফ এখনো ওই কর্মকর্তার নাম বা পূর্ণাঙ্গ পরিচয় প্রকাশ করেনি। পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের দাবি, তাকে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। তবে কেন একজন বাংলাদেশি সিনিয়র পুলিশ কর্মকর্তা সীমান্ত অতিক্রমের চেষ্টা করলেন, তা এখনও রহস্যই রয়ে গেছে।
বাংলাদেশি কর্মকর্তার এই ঘটনা সীমান্ত নিরাপত্তা ও দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্কে নতুন প্রশ্ন তুলেছে।
একই সময়ে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় আসাম রাজ্যের মন্ত্রিসভা একটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তারা জানিয়েছে, রাজ্যের সাধারণ প্রাপ্তবয়স্কদের আর আধার কার্ড দেওয়া হবে না। তবে তফসিলি উপজাতি, তফসিলি জনজাতি এবং চা-শ্রমিক সম্প্রদায়ের জন্য এক বছরের অতিরিক্ত সুযোগ থাকবে।
রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা জানিয়েছেন, এই পদক্ষেপের মূল লক্ষ্য হলো অবৈধ অনুপ্রবেশকারীদের হাত থেকে আধার কার্ড রোধ করা।
হিমন্ত বিশ্ব শর্মা বলেন—“আমরা সীমান্তে একের পর এক বাংলাদেশিকে আটক করেছি। গতকালও সাতজনকে ফেরত পাঠানো হয়েছে। কিন্তু সবাইকে আটক করা সম্ভব হচ্ছে না। তাই আসামকে সুরক্ষিত রাখতে আমরা চাই না কেউ অবৈধভাবে এসে আধার কার্ড নিয়ে ভারতীয় নাগরিক হিসেবে বসবাস করুক। আমরা সেই দরজা সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করে দিতে চাই।”
তবে যদি কেউ এক বছরের পরও আধার কার্ড না পান, সেক্ষেত্রে তিনি ডেপুটি কমিশনার (ডিসি)-এর কাছে আবেদন করতে পারবেন। এরপর ডিসি, পুলিশ সুপার এবং ফরেনার্স ট্রাইব্যুনালের পরামর্শ সাপেক্ষে বিরল ক্ষেত্রে অনুমোদন দেওয়া হতে পারে।
বাংলাদেশি পুলিশ কর্মকর্তাকে আটক করার ঘটনায় দুই দেশের সীমান্ত নীতি নিয়ে নতুন করে আলোচনা শুরু হয়েছে। একইসঙ্গে আসামের আধার কার্ড বিতরণে কড়াকড়ি ঘোষণা ইঙ্গিত দিচ্ছে, ভারত অবৈধ অনুপ্রবেশ রোধে আরও কঠোর হচ্ছে।
এ ধরনের সিদ্ধান্ত ভবিষ্যতে বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কের ওপর প্রভাব ফেলতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা।