নেপালের বিদ্রোহে নিহতদের শহিদ ঘোষণা: অন্তর্বর্তী প্রধানমন্ত্রী সুশীলা কারকির কঠোর বার্তা

নেপালের বিদ্রোহ সুশীলা হুঙ্কার, নিহতদের শহিদ ঘোষণা ও হিংসায় মদতদাতাদের ছাড় নয়—অন্তর্বর্তী প্রধানমন্ত্রীর অঙ্গীকার।

নেপালে সাম্প্রতিক যুব আন্দোলনের জেরে উত্তপ্ত পরিস্থিতি। কেপি শর্মা ওলি সরকারের পতনের পর সেদেশের হাল ধরেছেন প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি সুশীলা কারকি। রবিবার অন্তর্বর্তী প্রধানমন্ত্রী হিসাবে প্রথম ভাষণে তিনি স্পষ্ট করে জানান— বিদ্রোহে নিহতদের শহিদ ঘোষণা করা হবে, তবে যারা হিংসা ও ভাঙচুরে মদত দিয়েছে তাদের রেয়াত করা হবে না।

ওলি সরকারের পতনের পর নেপাল কার্যত রাজনৈতিক অচলাবস্থায় পড়েছিল। সেই শূন্যস্থান পূরণে অন্তর্বর্তী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নিলেন সুশীলা কারকি। দেশের প্রথম নারী প্রধান বিচারপতি হিসেবে পরিচিত কারকি এবার আবার ইতিহাস গড়লেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হয়ে।

৫ হাজারেরও বেশি যুব আন্দোলনকারীর ভার্চুয়াল বৈঠকের পর তাঁর নাম প্রস্তাব করা হয়। শর্ত ছিল ন্যূনতম ১,০০০ স্বাক্ষর। কিন্তু সমর্থনের জোয়ারে তিনি পেলেন ২,৫০০-রও বেশি স্বাক্ষর। পরে সেনাপ্রধান জেনারেল অশোক রাজ সিগদেল ও প্রেসিডেন্ট রামচন্দ্র পৌডেলের অনুমোদন পেয়ে দায়িত্বভার গ্রহণ করেন তিনি।

সুশীলা কারকি প্রথম ভাষণেই জানান, যুব বিদ্রোহে যারা প্রাণ দিয়েছেন তাঁদের শহিদ ঘোষণা করা হবে। নিহত পরিবারগুলিকে দেওয়া হবে ১০ লক্ষ টাকা আর্থিক সহায়তা, পাশাপাশি আহতদেরও সবরকম সহায়তা দেবে অন্তর্বর্তী সরকার।

তাঁর ভাষায়—“আমি এবং আমার সহযোগীরা ক্ষমতার স্বাদ নিতে আসিনি। আমরা ৬ মাসের বেশি থাকব না। নতুন সংসদ গঠন হলেই দায়িত্ব হস্তান্তর করব।”

যদিও নিহতদের শহিদ মর্যাদা ঘোষণা করা হয়েছে, সুশীলা কারকি একইসঙ্গে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন— যারা ভাঙচুর, লুটপাট হিংসায় মদত দিয়েছে, তাদের ছাড় দেওয়া হবে না। আইন অনুযায়ী তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এই বার্তাই প্রমাণ করে, অন্তর্বর্তী সরকার বিদ্রোহীদের ন্যায্য দাবি মানতে প্রস্তুত, তবে অরাজকতার বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানেই থাকবে।

নেপালের সাম্প্রতিক আন্দোলনে সবচেয়ে বড় ভূমিকা পালন করেছে তরুণ প্রজন্ম বা ‘জেন জি’। একটানা সাতাশ ঘণ্টা আন্দোলন চালিয়ে তারা প্রমাণ করেছে— দেশে অর্থনৈতিক সমতা দুর্নীতি দমনের জন্য তারা আপসহীন

বহু স্কুল ও কলেজ শিক্ষার্থী এই আন্দোলনে প্রাণ হারিয়েছে, যা দেশজুড়ে গভীর আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। তরুণরা বিশ্বাস করে, সুশীলা কারকির নেতৃত্বেই নতুন নেপালের স্বপ্ন বাস্তবায়িত হতে পারে।

সুশীলা কারকি স্পষ্ট করে দিয়েছেন— তাঁর মেয়াদ সর্বোচ্চ ৬ মাস। এই সময়ের মধ্যে নতুন সংসদ গঠন হলে তিনি দায়িত্ব হস্তান্তর করবেন। কিন্তু এত অল্প সময়ে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা আনা, দুর্নীতি দমন এবং অর্থনৈতিক সমতা প্রতিষ্ঠা— এসবই তাঁর সরকারের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ।

নেপালের ইতিহাসে এই প্রথম এত বড় পরিসরে তরুণরা সরাসরি সরকার গঠনে প্রভাব রেখেছে। তাদের প্রত্যাশা, দুর্নীতিমুক্ত ও সমঅধিকারভিত্তিক একটি নেপাল। এখন সবার চোখ সুশীলা কারকির দিকে— তিনি কি এই অল্প সময়ে জেন জি প্রজন্মের স্বপ্ন পূরণে সফল হবেন?

লেটেস্ট আপডেট...

আইপিএল স্পেশাল...

যশোর ক্রীড়া সংস্থায় কাজী এনামের অন্তর্ভুক্তি নিয়ে উত্তেজনা: ঘেরাও, স্মারকলিপি ও প্রতিবাদের ঝড়

যশোর ক্রীড়া সংস্থার এডহক কমিটিতে বিসিবির সাবেক পরিচালক কাজী এনাম আহমেদকে সদস্য হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করার সিদ্ধান্ত ঘিরে স্থানীয় ক্রীড়া সংগঠক, খেলোয়াড় ও ক্রীড়াপ্রেমীদের মধ্যে...

সেলিব্রেটি গসিপ...

মেগান মার্কেলের উদ্বেগ: প্রিন্স হ্যারির সঙ্গে রাজা চার্লসের মিলন ঘিরে নতুন বিতর্ক

প্রিন্স হ্যারি এ সপ্তাহে লন্ডনে ফিরেছেন। আনুষ্ঠানিকভাবে তিনি যোগ দিচ্ছেন WellChild Awards-এ, তবে আড়ালে আলোচনার বিষয় হচ্ছে—তিনি কি তাঁর দূরত্ব তৈরি হওয়া বাবা, রাজা...

সম্পর্কিত আরও পড়ুন...

Leave a reply

Please enter your comment!
Please enter your name here

Translate »