আদালতে বিচারকের সামনে সাংবাদিককে মারধর: ন্যায়বিচারের আসনে নজিরবিহীন ঘটনা

আদালতে সাংবাদিককে মারধর ঘটনা বিচারকের সামনেই ঘটে। আইনজীবীদের হামলায় সাংবাদিক আহত, বিচার প্রক্রিয়া নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

বাংলাদেশের আদালত ব্যবস্থা দীর্ঘদিন ধরে ন্যায়বিচারের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত হয়ে আসছে। তবে সম্প্রতি ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ঘটে যাওয়া এক ঘটনাকে ঘিরে তীব্র সমালোচনা শুরু হয়েছে। বিচারকের সামনেই এক সাংবাদিককে আইনজীবীরা শারীরিকভাবে আক্রমণ করেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনা শুধু গণমাধ্যম নয়, বিচার ব্যবস্থার বিশ্বাসযোগ্যতার ওপরও প্রশ্ন তুলছে।

বৃহস্পতিবার (তারিখ উল্লেখযোগ্য নয়) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট হাসিব উল্লাহ পিয়াসের আদালতে এই হামলার ঘটনা ঘটে। জানা যায়, সন্ত্রাসবিরোধী আইনের এক মামলায় শাহবাগ থানার আওতায় আটক সাংবাদিক মঞ্জুরুল আলম পান্নাকে আদালতে হাজির করা হয়। আদালতের প্রচলিত নিয়ম অনুযায়ী বিচারক উপস্থিত হওয়ার আগে আইনজীবী ও সাংবাদিক ছাড়া অন্য সবাইকে কক্ষ থেকে বের করে দেওয়া হয়।

তবে এ সময় কিছু আইনজীবী সাংবাদিকদেরও বেরিয়ে যেতে বলেন। এর পর থেকেই উত্তেজনা তৈরি হয় এবং সংঘর্ষে রূপ নেয়।

ঘটনার একাধিক ভিডিওতে দেখা গেছে, কয়েকজন আইনজীবী এজলাস কক্ষের ভেতরে হট্টগোল শুরু করেন এবং সাংবাদিকদের বের করে দেওয়ার চেষ্টা করেন। ভিডিওতে স্পষ্ট শোনা যায়, কেউ কেউ সাংবাদিককে রক্ষা করার জন্য চিৎকার করছেন—“সাংবাদিককে মাইরেন না।” কিন্তু সেই অনুরোধ উপেক্ষা করে কিছু আইনজীবী সহিংস আচরণ অব্যাহত রাখেন।

সময় টেলিভিশনের সাংবাদিক আসিফ হোসাইন সিয়াম জানান, তিনি সাংবাদিক মঞ্জুরুল আলম পান্নার জামিন শুনানির সংবাদ সংগ্রহ করতে সেখানে উপস্থিত ছিলেন। নিজের পরিচয় দিয়ে কথা বলতে গেলে কয়েকজন আইনজীবী হঠাৎ তার ওপর চড়াও হন।

তার ভাষ্য অনুযায়ী, একজন আইনজীবী দূর থেকে এসে তার বাম গালে ঘুষি মারেন। তিনি বিচারকের সামনে দাঁড়িয়ে খবর সংগ্রহের চেষ্টা করলে চারদিক থেকে হামলা শুরু হয়। এসময় বিচারক কক্ষ ত্যাগ করেন বলে অভিযোগ করেন তিনি।

ঘটনাস্থলে উপস্থিত রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী কাইয়ুম হাসান নয়ন জানান, হঠাৎ করেই আদালত কক্ষে হট্টগোল শুরু হয়। তিনি বলেন, “আমি দেখলাম একজনকে মারধর করা হচ্ছে। তখন আমি তাকে রক্ষা করার চেষ্টা করি। তবে আসলে কী কারণে এই ঘটনা ঘটল তা আমি নিশ্চিত নই।”

এ ধরনের ঘটনা শুধু সাংবাদিকদের নিরাপত্তাকেই হুমকির মুখে ফেলে না, বরং আদালতের মর্যাদা নিয়েও প্রশ্ন তোলে। আদালত হচ্ছে আইনের শাসন ও ন্যায়বিচারের প্রতীক, অথচ সেই স্থানেই সাংবাদিকদের ওপর হামলার ঘটনা গণতান্ত্রিক মূল্যবোধকে আঘাত করেছে।

সাংবাদিক সংগঠনগুলো ইতিমধ্যে এ ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। তারা বলছে, আদালতের মতো নিরাপদ স্থানে সাংবাদিকদের ওপর হামলা গণতন্ত্র ও সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতার জন্য একটি অশনিসঙ্কেত। সংবাদ সংগ্রহের সময় সাংবাদিকরা যদি নিরাপত্তাহীনতায় ভোগেন, তবে জনগণের তথ্য জানার অধিকারও ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

এই ঘটনায় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিরপেক্ষ তদন্ত ও দায়ীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি উঠেছে। বিচারক, আইনজীবী ও সাংবাদিক—তিন পক্ষের সম্মান ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করাই বিচার ব্যবস্থার স্বচ্ছতা ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার মূল ভিত্তি।

লেটেস্ট আপডেট...

আইপিএল স্পেশাল...

যশোর ক্রীড়া সংস্থায় কাজী এনামের অন্তর্ভুক্তি নিয়ে উত্তেজনা: ঘেরাও, স্মারকলিপি ও প্রতিবাদের ঝড়

যশোর ক্রীড়া সংস্থার এডহক কমিটিতে বিসিবির সাবেক পরিচালক কাজী এনাম আহমেদকে সদস্য হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করার সিদ্ধান্ত ঘিরে স্থানীয় ক্রীড়া সংগঠক, খেলোয়াড় ও ক্রীড়াপ্রেমীদের মধ্যে...

সেলিব্রেটি গসিপ...

মেগান মার্কেলের উদ্বেগ: প্রিন্স হ্যারির সঙ্গে রাজা চার্লসের মিলন ঘিরে নতুন বিতর্ক

প্রিন্স হ্যারি এ সপ্তাহে লন্ডনে ফিরেছেন। আনুষ্ঠানিকভাবে তিনি যোগ দিচ্ছেন WellChild Awards-এ, তবে আড়ালে আলোচনার বিষয় হচ্ছে—তিনি কি তাঁর দূরত্ব তৈরি হওয়া বাবা, রাজা...

সম্পর্কিত আরও পড়ুন...

Leave a reply

Please enter your comment!
Please enter your name here

Translate »