আন্তর্জাতিক অ্যাথলেটিক্স দুনিয়ায় এক অনন্য অধ্যায় লিখে যাচ্ছেন সুইডেনের তারকা আর্মান্ড ডুপ্লান্টিস। বয়স মাত্র ২৫ হলেও, ইতিমধ্যেই তিনি গড়ে ফেলেছেন অবিশ্বাস্য কীর্তি—১৪ বার নিজের বিশ্বরেকর্ড ভেঙে নতুন ইতিহাস রচনা করেছেন। এবারও ব্যতিক্রম হয়নি। বিশ্ব অ্যাথলেটিক্স চ্যাম্পিয়নশিপে ৬.৩০ মিটার উচ্চতা অতিক্রম করে তিনি আবারও সোনা জিতলেন এবং টানা তৃতীয়বারের মতো বিশ্বচ্যাম্পিয়নের মুকুট মাথায় তুললেন।
২০২০ সালে পোল্যান্ডে প্রথমবার নিজের নাম বিশ্বরেকর্ডের খাতায় তুলেছিলেন আর্মান্ড ডুপ্লান্টিস। সেদিন তিনি লাফিয়েছিলেন ৬.১৭ মিটার। সেই থেকে শুরু হয় এক অসাধারণ যাত্রা, যেখানে প্রতিবারই নিজের তৈরি রেকর্ড ভাঙার মাধ্যমে একের পর এক নতুন দিগন্ত ছুঁয়েছেন।
টোকিয়োতে অনুষ্ঠিত বিশ্ব অ্যাথলেটিক্স চ্যাম্পিয়নশিপে প্রত্যাশামতোই স্বর্ণপদক জিতেছেন ডুপ্লান্টিস। সেখানে তিনি অতিক্রম করেন ৬.৩০ মিটার উচ্চতা, যা তার ১৪তম বিশ্বরেকর্ড। এর আগে গত আগস্টে তিনি ৬.২৯ মিটার লাফিয়ে ১৩তম বিশ্বরেকর্ড গড়েছিলেন। মাত্র ৩৩ দিনের মাথায় সেই রেকর্ডও ভেঙে দেন নিজেই।
ডুপ্লান্টিসের সাফল্যের ধারাবাহিকতায় বড় একটি মাইলফলক ছিল প্যারিস অলিম্পিক্স। সেখানে তিনি ৬.২৫ মিটার লাফিয়ে অলিম্পিক স্বর্ণপদক জয় করেন। এর পর থেকে বিশ্বরেকর্ড ভাঙা যেন হয়ে গেছে তার অভ্যাস। শুধু অলিম্পিক নয়, প্রতিটি বড় মঞ্চেই তিনি নিজের শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণ করে চলেছেন।
ধারাবাহিক রেকর্ড ভাঙার বিস্ময়কর যাত্রা
- ২০২০ (পোল্যান্ড): প্রথম বিশ্বরেকর্ড – ৬.১৭ মিটার
- ২০২১–২০২৪: একাধিকবার নিজের রেকর্ড ভেঙে নতুন রেকর্ড
- ২০২৪ (প্যারিস অলিম্পিক্স): ৬.২৫ মিটার লাফিয়ে সোনা
- ২০২৫ (বিশ্ব অ্যাথলেটিক্স চ্যাম্পিয়নশিপ, টোকিয়ো): ৬.৩০ মিটার, ১৪তম বিশ্বরেকর্ড
ডুপ্লান্টিসের সাফল্যের মূল রহস্য হলো তার ধারাবাহিকতা, শৃঙ্খলা ও মানসিক দৃঢ়তা। যেখানে অনেক অ্যাথলিট একবার রেকর্ড গড়েই ইতিহাসে নাম লেখান, সেখানে তিনি প্রতিবারই নিজের সীমা অতিক্রম করে চলেছেন। তার টেকনিক, শারীরিক সক্ষমতা এবং মানসিক প্রস্তুতি তাকে অন্য সবার থেকে আলাদা করেছে।
আর্মান্ড ডুপ্লান্টিস শুধু সুইডেন নয়, বিশ্ব অ্যাথলেটিক্সের গর্ব। পোলভল্টে তার আধিপত্য এখন এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে প্রতিদ্বন্দ্বীরা তাকে হারানোর চেয়ে বরং তার ধারাবাহিক রেকর্ড ভাঙা দেখতেই অভ্যস্ত হয়ে গেছে।
আর্মান্ড ডুপ্লান্টিস আজকের দিনে পোলভল্ট ইতিহাসের এক কিংবদন্তি। মাত্র ২৫ বছর বয়সেই তিনি যা অর্জন করেছেন, তা ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য অনুপ্রেরণা হয়ে থাকবে। তার ১৪টি বিশ্বরেকর্ড শুধু সংখ্যার হিসাব নয়, বরং এক লড়াইয়ের গল্প—নিজেকে প্রতিবার ছাড়িয়ে যাওয়ার এক নিরন্তর যাত্রা।
👉 ডুপ্লান্টিসের প্রতিটি নতুন রেকর্ড প্রমাণ করে দিচ্ছে, সীমা বলে কিছু নেই। সঠিক মানসিকতা, অনুশীলন ও অধ্যবসায়ের মাধ্যমে যে কোনো খেলোয়াড়ই ইতিহাসের পাতায় নিজের নাম অমর করে রাখতে পারে।