হলিউডের কিংবদন্তি নায়িকা মেরিলিন মনরোর নাম শুনলেই মনে পড়ে সৌন্দর্য, অভিনয় এবং ইতিহাস। তাঁর লস অ্যাঞ্জেলসের ব্রেন্টউড অঞ্চলের বাড়িটি শুধু একটি স্থাপনা নয়, বরং এটি তাঁর জীবনের শেষ দিনগুলোর সাক্ষী। সম্প্রতি এই বাড়ি ভাঙার পরিকল্পনা ঘিরে তীব্র বিতর্ক তৈরি হয়েছিল, তবে শেষ পর্যন্ত আদালতের রায়ে এই ঐতিহাসিক বাড়িটি রক্ষা পেয়েছে।
ভাঙার মুখে মনরোর স্মৃতিবাহী বাড়ি
২০২৩ সালে মেরিলিন মনরোর বাড়িটি ৮.৪ মিলিয়ন মার্কিন ডলারে বিক্রি হয়, যা ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ৭৪ কোটি টাকার সমান। এই বাড়িটি কেনেন রয় ব্যাংক এবং ব্রিনা মিলস্টেন নামের এক দম্পতি। তাঁদের আগেই মনরোর বাড়ির লাগোয়া একটি সম্পত্তি ছিল। নতুন বাড়ি নির্মাণের পরিকল্পনায় তাঁরা মনরোর বাড়িটি ভেঙে ফেলার প্রস্তাব দেন।
কিন্তু বিষয়টি সেখানেই থেমে যায়নি। লস অ্যাঞ্জেলস সিটি কাউন্সিল এবং স্থানীয় প্রশাসন এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে। দুই বছর ধরে আদালতে চলে শুনানি। অবশেষে আদালতের রায়ে জানানো হয়, মেরিলিন মনরোর এই ঐতিহাসিক বাড়ি ভাঙা যাবে না।
আদালতের ঐতিহাসিক রায়
লস অ্যাঞ্জেলস সুপিরিয়র কোর্টের বিচারপতি স্পষ্টভাবে জানান, এই বাড়িটি ধ্বংস করা হলে সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ধ্বংস হবে। ফলে মালিকদের আবেদনে সায় দেওয়া হয়নি। নগর প্রশাসন আদালতের রায় পেয়ে সন্তুষ্ট হয়। এই রায় কার্যত মেরিলিন মনরোর শেষ আশ্রয়স্থলকে বাঁচিয়ে দিল, যা এখন শুধু একটি বাড়ি নয়, বরং বিশ্ব সংস্কৃতির অমূল্য অংশ।
ঐতিহাসিক ও সাংস্কৃতিক গুরুত্ব
প্রসঙ্গত, লস অ্যাঞ্জেলস সিটি কাউন্সিল আগেই মেরিলিন মনরোর বাড়িটিকে “ঐতিহাসিক সাংস্কৃতিক স্মৃতিচিহ্ন” হিসেবে ঘোষণা করেছিল। এটি শুধু একটি স্থাপনা নয়, বরং একটি সাংস্কৃতিক প্রতীক, যেখানে বিশ্বের কোটি ভক্তের আবেগ জড়িয়ে আছে।
মেরিলিন মনরো ছিলেন বিংশ শতকের অন্যতম প্রভাবশালী নায়িকা। তাঁর বাড়িটি আজকের দিনে দর্শনার্থীদের কাছে এক অনন্য ইতিহাসের নিদর্শন। তাই আদালতের রায়ের মাধ্যমে কার্যত সংরক্ষিত হলো হলিউডের ইতিহাসের এক গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়।
মনরোর বাড়ি: শুধু একটি আশ্রয় নয়, একটি ইতিহাস
বিশ্বজুড়ে কোটি ভক্তের হৃদয়ে এখনও বেঁচে আছেন মেরিলিন মনরো। তাঁর সৌন্দর্য, অভিনয়, ব্যক্তিত্ব সবকিছুই কিংবদন্তিতে পরিণত হয়েছে। তিনি জীবনের শেষ দিনগুলো কাটিয়েছিলেন লস অ্যাঞ্জেলসের এই ব্রেন্টউডের বাড়িতে। তাই বাড়িটি ভেঙে ফেলা মানেই এক টুকরো ইতিহাস মুছে যাওয়া।
আদালতের রায় শুধু একটি স্থাপনা রক্ষা করেনি, বরং এটি প্রমাণ করেছে যে সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও ঐতিহাসিক স্মৃতিচিহ্ন ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য সংরক্ষণ করা জরুরি।
মেরিলিন মনরোর বাড়ি ঘিরে দীর্ঘদিন ধরে চলা বিতর্কের অবসান ঘটল আদালতের রায়ে। এখন এটি কেবল একটি বাড়ি নয়, বরং একটি স্মৃতিচিহ্ন, একটি ইতিহাস এবং ভক্তদের আবেগের প্রতীক। হলিউডের এই কিংবদন্তি নায়িকার স্মৃতি অমলিন রাখতে তাঁর এই বাড়ি আগামী প্রজন্মের জন্যও বেঁচে থাকবে।