বাংলাদেশের রাজনীতির অঙ্গনে আবারও আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে এসেছে নির্বাচন ও গণতন্ত্র রক্ষা আন্দোলন। বিএনপির খুলনা বিভাগীয় ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত যশোরে এক সমাবেশে স্পষ্টভাবে বলেছেন, “জাতি ইতোমধ্যেই নির্বাচনের ট্রেনে চড়ে বসেছে। কিন্তু এই নির্বাচনী ট্রেনকে থামানোর ষড়যন্ত্র চলছে।”
তিনি সতর্ক করে দেন, যারা এই ট্রেনকে থামাতে চায়, তারা আসলে ফ্যাসিস্ট শক্তির সহযোগী। তাদের উদ্দেশ্যে অমিতের বার্তা—নিজস্ব স্বার্থে জনগণের গণতান্ত্রিক স্বপ্নকে গলা টিপে হত্যা করবেন না।বিএনপির ৪৭ তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে যশোরে এক সমাবেশে প্রধান বক্তার বক্তব্যকালে তিনি এই মন্তব্য করেন। আজ সোমবার বিকালে শহরের টাইন হল ময়দানে জেলা বিএনপির আয়োজনে এই সমাবেশে প্রধান অতিথি ছিলেন দলটির ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক নার্গিস বেগম।
সমাবেশে অমিত বলেন, দেশের সংকটকালে অর্ন্তবর্তীকালী সরকারের প্রধান প্রফেসর ড. মো. ইউনুস জাতির সামনে ত্রাতা হিসেবে আর্বিভূত হয়েছেন। তিনি এবং তার সরকারের সদস্যরা উপলদ্ধি করেছেন, অনির্বাচিত সরকার ব্যবস্থা দীর্ঘমেয়াদে চলতে পারে না। সেটি দেশের জন্য মঙ্গল হয় না। সেই উপলদ্ধি থেকে অর্ন্তবর্তীকালীন সরকার আগামী নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করেছে। আসুন বিএনপির মতো ফ্যাসিবাদ বিরোধী সকল শক্তি তাকে সহযোগিতা করি।

তিনি বলেন, ফ্যাসিবাদ বিরোধী আন্দোলনে আমাদের সাথে থাকার পরও দুর্ভাগ্য বশত আজ তাদের মুখ থেকে নব্য ফ্যাসিবাদের প্রতি ধ্বনি শুনতে পাচ্ছি।
অনিন্দ্য ইসলাম অমিত দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন, ষড়যন্ত্রকারীদের ষড়যন্ত্র নিয়ে মাথা ঘামিয়ে লাভ নেই। নিজেদের সাংগঠনিক প্রক্রিয়া জোরদার করে জনগণের কাছে পৌঁছাতে হবে। দেশের রাজনীতির আকাশে আবারও কালো মেঘের ঘনঘাটা দেখা যাচ্ছে। দীর্ঘ ১৬ বছরের অনেক ষড়যন্ত্র এবং নীল নকশা দেখেছি। ষড়যন্ত্রের সমাধান সূত্র হচ্ছে, নিজেদের সংগঠনকে শক্তিশালী এবং মজবুত করা। নিজের রাজনৈতিক কর্মসূচির সাথে জনগণের সম্পর্ক বাড়ানো। যদি নিজেদের সাংগঠনিক শক্তি জোরাদার করে নিজেদের মধ্যে ইস্পাত কঠিন ঐক্য তৈরি করে জনগণে সম্পৃক্ততা নিশ্চিত করতে পারি। নতুন বাংলাদেশ বির্নিমাণে রাষ্ট্র মেরামতে তারেক রহামন যে ৩১ দফা ঘোষণা করেছেন প্রতিটি ঘরে পৌঁছে দিতে পারি, তাহলে যতই ষড়যন্ত্র হোক না কেন? বাংলাদেশের মানুষের গণতান্ত্রিক আকাঙ্খা রুদ্ধ করার শক্তি তাদের নেই।

জেলা বিএনপির সভাপতি অ্যাড. সৈয়দ সাবেরুল হক সাবুর সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক শহিদুল বারী রবু, জেলা বিএনপির সাবেক সদস্য আব্দুস সালাম আজাদ, মারুফুল ইসলাম, সদর উপজেলা বিএনপির সিনিয়র সহ সভাপতি অধ্যাপক আব্দার হোসেন খান, নগর বিএনপির সভাপতি রফিকুল ইসলাম চৌধুরী মুল্লুক চাঁদ, সাধারণ সম্পাদক এহসানুল হক সেতু, জেলা মহিলা দলের সভাপতি রাশিদা রহমান, জেলা যুবদলের আহ্বায়ক এম তমাল আহমেদ, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক মোস্তফা আমির ফয়সাল প্রমুখ।
সমাবেশে শেষে শহরের টাউন হল ময়দান থেকে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক নার্গিস ইসলাম বেগমের নেতৃত্বে র্যালি বের হয়। দড়াটানা ঘুরে আরএন রোড হয়ে মনিহার মোড়ে যেয়ে শেষ হয়। জাতীয় ও দলীয় পতাকা হাতে নিয়ে নেতাকর্মীরা র্যালিতে অংশ নেয়। এতে পুরো শহরজুড়ে সৃষ্টি হয় উৎসবমুখর পরিবেশ।