‘জুলাইযোদ্ধা’র ব্যানার সরিয়ে ‘আন্তর্জাতিক ফ্যাসিজম ও গণহত্যা গবেষণা ইনস্টিটিউট’ নামে নতুন পরিচয়ে হাজির ভবনটি
রাজধানীর গুলিস্তানে অবস্থিত আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয় এতদিন ছিল পরিত্যক্ত। সেই ভবনের সামনে ঝুলছিল ‘জুলাইযোদ্ধার প্রধান কার্যালয়’ ব্যানার। তবে এবার নতুনভাবে ভবনটিকে পরিচ্ছন্ন ও সচল করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ভবনের সামনেই টানানো হয়েছে ‘আন্তর্জাতিক ফ্যাসিজম ও গণহত্যা গবেষণা ইনস্টিটিউট’ নামক দুটি ব্যানার।
পুরো ভবনে চলছে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজ, যা শুরু হয়েছে গত বুধবার (২৩ জুলাই) থেকে। এক বছর ধরে অব্যবহৃত পড়ে থাকা ১০ তলাবিশিষ্ট ভবনটিকে নতুন করে সাজাতে কাজ করছে প্রায় ১০ থেকে ১২ জন কর্মী।
পরিত্যক্ত ভবনে ময়লার স্তূপ, এবার শুরু নতুন অধ্যায়
দীর্ঘদিনের অবহেলার কারণে ভবনটির অবস্থা ছিল শোচনীয়। নিচতলা থেকে শুরু করে দোতলা ও তৃতীয় তলা পর্যন্ত জমে থাকা ময়লা, ইটের খোয়া ও আবর্জনা সরানো হচ্ছে।
- বুধবার: নিচতলার পরিষ্কার শুরু
- বৃহস্পতিবার: দ্বিতীয় ও তৃতীয় তলার কাজ চলছে
পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজে নিয়োজিতরা জানিয়েছেন, পুরো ভবন পরিষ্কার করার পর তা হস্তান্তর করা হবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে যুক্তদের হাতে।
কী হবে ভবনের ভবিষ্যৎ ব্যবহার?
যদিও ‘আন্তর্জাতিক ফ্যাসিজম ও গণহত্যা গবেষণা ইনস্টিটিউট’ নিয়ে বিস্তারিত কিছু বলেননি কর্মীরা, তবে তারা জানিয়েছেন— ভবনের কোন তলায় কী কার্যক্রম হবে, তা ঠিক করবে ছাত্র ও জনতা। ভবনটি ব্যবহৃত হবে
- জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আহত ব্যক্তি ও শহীদ পরিবারের জন্য অফিস হিসেবে
- ছাত্র আন্দোলনের সংগঠকদের উদ্যোগে পরিচালিত বিভিন্ন গবেষণামূলক কাজের জন্য
অভ্যুত্থানের পর ভবনের করুণ পরিণতি
গত বছরের ৫ আগস্ট, ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের দিন বিকেলে ভবনটিতে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। এরপর ভবনের আসবাবপত্র ও ধাতব সামগ্রী লুট করে নেওয়া হয়।
পরবর্তী কয়েক মাসে ভবনটি হয়ে ওঠে—
- ছিন্নমূল মানুষের অস্থায়ী আশ্রয়স্থল
- রিকশাচালক ও শ্রমিকদের শৌচাগার
- নেশাগ্রস্তদের আড্ডাস্থল
মলমূত্র ও আবর্জনার গন্ধে ভবনের পাশ দিয়ে হাঁটা দুর্বিষহ হয়ে উঠেছিল।
দৃষ্টিনন্দন ভবনের নির্মাণ ও ইতিহাস
এই ১০ তলা ভবনটি আওয়ামী লীগের পুরোনো কেন্দ্রীয় কার্যালয় ভেঙে নির্মাণ করা হয়েছিল।
- নির্মাণ ব্যয়: প্রায় ১০ কোটি টাকা
- নির্মাণকাল: আধুনিক সুযোগ-সুবিধাসম্পন্ন স্থাপনা
- উদ্বোধন: ২০১৮ সালের ২৩ জুন, উদ্বোধন করেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
এরপর কয়েক বছর ব্যবহার হলেও গণঅভ্যুত্থানের পর ভবনটি একেবারেই পরিত্যক্ত হয়ে পড়ে।