রাজধানী ঢাকার কাকরাইলে শুক্রবার (২৯ আগস্ট) সন্ধ্যায় জাতীয় পার্টি (জাপা) ও গণঅধিকার পরিষদের নেতাকর্মীদের মধ্যে তীব্র সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে ঘটে যাওয়া এ সংঘর্ষ দ্রুতই পুরো এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে দেয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সেনাবাহিনী, পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিপুলসংখ্যক সদস্য মোতায়েন করা হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, বিকেল সোয়া ৬টার দিকে গণঅধিকার পরিষদের একটি মিছিল কাকরাইল এলাকায় প্রবেশ করে। অভিযোগ রয়েছে, মিছিলটি জাপার কার্যালয়ের সামনে পৌঁছালে প্রথমে ইটপাটকেল নিক্ষেপ শুরু হয়। দুই পক্ষের মধ্যে মুহূর্তেই পাল্টাপাল্টি ধাওয়া, সংঘর্ষ ও মারামারি শুরু হয়ে যায়।
জাতীয় পার্টির নেতাদের দাবি, গণঅধিকার পরিষদের কর্মীরা পূর্বপরিকল্পিতভাবে তাদের কার্যালয়ে হামলা চালিয়েছে। অন্যদিকে গণঅধিকার পরিষদ অভিযোগ করছে, তারা শান্তিপূর্ণভাবে মিছিল নিয়ে যাচ্ছিল, কিন্তু জাপার কর্মীরাই প্রথম আক্রমণ করে উসকানি দেয়।
গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান বলেন, “আমাদের শান্তিপূর্ণ মিছিলে জাতীয় পার্টি ও আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা অতর্কিত হামলা চালিয়েছে। এতে আমাদের অনেক কর্মী আহত হয়েছেন, তাদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।”
অন্যদিকে জাতীয় পার্টির মহাসচিব শামীম হায়দার পাটোয়ারী জানান, “গণঅধিকার পরিষদের হামলায় আমাদের বহু নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। অনেকে এখনো হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তবে আমাদের কর্মীরা সাহসিকতার সঙ্গে প্রতিরোধ গড়ে তোলে, যার ফলে তারা পিছু হটে।”
জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের প্রেস সেক্রেটারি খন্দকার দেলোয়ার জালালী দাবি করেন, “এটি ছিল সন্ত্রাসী হামলা। আমরা শুনছি আরও হামলার পরিকল্পনা রয়েছে। তবে সেনাবাহিনী ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী মাঠে থাকায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এসেছে।”
সংঘর্ষের খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে সেনাবাহিনী, পুলিশ ও অন্যান্য বাহিনী উত্তেজনা নিয়ন্ত্রণে আনে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কড়া অবস্থানের কারণে বর্তমানে এলাকায় কিছুটা শান্ত পরিবেশ ফিরেছে। তবে আশপাশের মানুষ এখনও ভীত-সন্ত্রস্ত অবস্থায় দিন কাটাচ্ছেন।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, জাতীয় পার্টি ও গণঅধিকার পরিষদের সংঘর্ষ রাজধানীতে নতুন করে উত্তেজনা তৈরি করেছে। উভয় পক্ষের পাল্টাপাল্টি অভিযোগে রাজনীতি আরও অস্থিতিশীল হয়ে উঠতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। বিশেষ করে নির্বাচনী সময় ঘনিয়ে আসায় রাজনৈতিক সংঘর্ষের ঘটনা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলতে পারে।
এ সংঘর্ষের কারণে কাকরাইল এবং আশপাশের রাস্তায় যানজট সৃষ্টি হয়। অনেক সাধারণ মানুষ আতঙ্কে দোকানপাট বন্ধ করে দেন। কর্মস্থল থেকে ফিরতে গিয়ে অনেকে ভোগান্তির শিকার হন।