ফেসবুক ব্যবহারকারীদের জন্য সুখবর! এক দশক আগে জনপ্রিয় হলেও ২০১৪ সালে বন্ধ হয়ে যাওয়া ফেসবুকের “পোক” ফিচার আবারও ফিরছে। এবার আরও আধুনিক রূপে, নতুন কিছু ফিচার ও ইমোজি সহকারে মেটা এই নস্ট্যালজিক ফিচারটি পুনরায় চালু করতে যাচ্ছে। নতুন প্রজন্মকে আকৃষ্ট করার পাশাপাশি পুরনো ব্যবহারকারীদের স্মৃতিও ফিরিয়ে আনবে এই পরিবর্তন।
২০০৪ সালে চালু হওয়া ফেসবুকের পোক ফিচার ছিল এক সময়ের অন্যতম জনপ্রিয় মাধ্যম। কারও মনোযোগ আকর্ষণ করতে কিংবা হালকা ফ্লার্ট করতে এই ফিচারটি ব্যবহার করতেন লক্ষ লক্ষ ব্যবহারকারী। কিন্তু প্রযুক্তির পরিবর্তনের সাথে সাথে মেসেঞ্জার, রিঅ্যাকশন, কমেন্ট ও লাইক সিস্টেম জনপ্রিয়তা পেতে শুরু করে। ফলস্বরূপ, পোক ফিচার ধীরে ধীরে গুরুত্ব হারিয়ে ২০১৪ সালে বন্ধ করে দেয় ফেসবুক।
কিন্তু এখন, মেটা আবারও সেই পুরনো স্মৃতিকে ফিরিয়ে আনতে নতুনত্বের ছোঁয়ায় পোক ফিচারটি ফিরিয়ে আনছে।
মেটার তরফ থেকে জানানো হয়েছে, এবার ফেসবুক প্রোফাইল থেকেই সরাসরি পোক করা যাবে।বন্ধুকে খুঁজে পেতে সার্চ বারে যাওয়ার প্রয়োজন নেই, প্রোফাইল ভিজিট করলেই সহজে “পোক” বাটন পাওয়া যাবে, পোক করলে সঙ্গে সঙ্গে নোটিফিকেশন চলে যাবে, নতুন ইমোজি ব্যবহার করে এক্সপ্রেশন আরও মজাদার করা যাবে
এই আপডেট শুধু পুরনো ইউজারদের মধ্যে নস্ট্যালজিয়া ফিরিয়ে আনবেই না, বরং Gen Z প্রজন্মকেও ফেসবুকের দিকে আকৃষ্ট করার লক্ষ্যেই মেটার এই উদ্যোগ।
বিশ্বব্যাপী সামাজিক যোগাযোগের ক্ষেত্রটি এখন অত্যন্ত প্রতিযোগিতাপূর্ণ। টিকটক, ইনস্টাগ্রাম, স্ন্যাপচ্যাটের মতো অ্যাপগুলো তরুণ প্রজন্মের উপর ব্যাপক প্রভাব ফেলছে। ফেসবুকের ব্যবহারকারীর সংখ্যা ধরে রাখতে এবং Gen Z-কে প্ল্যাটফর্মে আকর্ষণ করার জন্য মেটা নতুন ও স্মার্ট ফিচার যোগ করার দিকে নজর দিচ্ছে।
পোক ফিচারটি এরই অংশ। এটি শুধু ইউজারদের মধ্যে ইন্টারঅ্যাকশন বাড়াবে না, বরং ফেসবুকে ব্যক্তিগত সংযোগ ও এনগেজমেন্ট বৃদ্ধিতেও বড় ভূমিকা রাখবে।
যারা ২০০৪ থেকে ২০১৪ সালের মধ্যে ফেসবুক ব্যবহার করেছেন, তারা নিশ্চয়ই জানেন, পোক ফিচারটি ছিল অনেকের প্রথম সোশ্যাল ইন্টারঅ্যাকশনের অংশ। হঠাৎ কারও কাছ থেকে পোক নোটিফিকেশন পেলে যে উচ্ছ্বাস তৈরি হতো, সেটি আজও অনেকের মনে গেঁথে আছে।
মেটা সেই নস্ট্যালজিয়াকে নতুন প্রজন্মের কাছে আরও মজাদার করে তুলতে চাইছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই পদক্ষেপটি পুরনো ব্যবহারকারীদের আবারও ফেসবুকে সক্রিয় করবে।
মেটা জানিয়েছে, ফেসবুকের লক্ষ্য শুধু পুরনো স্মৃতি ফিরিয়ে আনা নয়, বরং প্ল্যাটফর্মের ব্যবহারকারীর অভিজ্ঞতা উন্নত করা। নতুন পোক ফিচারের সাথে থাকছে আরও কিছু আপডেটেড সুবিধা: ইন্টারঅ্যাকশন আরও দ্রুত ও সহজ হবে, ইমোজির মাধ্যমে এক্সপ্রেশন বেশি ব্যক্তিগত হবে, ফ্রেন্ডশিপ ও কানেকশন বৃদ্ধিতে সহায়ক হবে, নতুন ব্যবহারকারীদের জন্য ইউজার-ফ্রেন্ডলি ইন্টারফেস এই পরিবর্তনগুলো ফেসবুককে আবারও তরুণদের কাছে আরও আকর্ষণীয় করে তুলবে।
ফেসবুকের জন্য এটি কেবল শুরু। মেটা ক্রমাগত চেষ্টা করছে সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মটিকে আরও আধুনিক, ফ্রেন্ডলি ও এন্টারটেইনিং করে তুলতে। পোক ফিচারটি শুধু একটি নস্ট্যালজিক রিটার্ন নয়, বরং নতুন যুগের ডিজিটাল কমিউনিকেশন গড়ার পথে একটি বড় পদক্ষেপ।
ফেসবুকের পোক ফিচারের প্রত্যাবর্তন কেবলমাত্র পুরনো দিনের স্মৃতি ফিরিয়ে আনছে না, বরং তরুণ প্রজন্মের জন্য নতুন এক অভিজ্ঞতার দরজা খুলে দিচ্ছে। ইমোজি, সহজ ইন্টারফেস এবং দ্রুত এক্সপ্রেশনের সুবিধার কারণে এই ফিচারটি আবারও ভাইরাল হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
যারা একসময় পোক পাঠিয়ে বন্ধুত্ব, মজা কিংবা ফ্লার্ট করতেন, তারা আবারও সেই অভিজ্ঞতা ফিরে পাবেন। আর যারা নতুন ব্যবহারকারী, তারা পাবে আরও মজাদার, ইন্টারঅ্যাকটিভ এবং আকর্ষণীয় একটি ফেসবুক।