ক্রিকেট দুনিয়ায় আবারও আলোচনার কেন্দ্রে ইরফান পাঠান। পাঁচ বছরের পুরনো একটি সাক্ষাৎকারের মন্তব্য নতুন করে সোশাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়ায় শুরু হয়েছে তুমুল বিতর্ক। বিষয়টি ঘিরে নেটিজেনদের আঙুল উঠেছে প্রাক্তন ভারতীয় অধিনায়ক মহেন্দ্র সিং ধোনির দিকেও। ইরফানের বক্তব্যকে কেন্দ্র করে এখন ক্রিকেট মহল গরম।
ইরফান পাঠানের একটি সাক্ষাৎকারের অংশ হঠাৎ করেই ভাইরাল হয়ে পড়ে সোশাল মিডিয়ায়। সেখানে তাঁকে বলতে শোনা যায়—
“কারও ঘরে গিয়ে হুঁকো সেজে দিয়ে আসার অভ্যাস আমার নেই। একজন ক্রিকেটারের মূল কাজ মাঠে পারফর্ম করা। সেটাই আমি করে গিয়েছি।”
এই মন্তব্যের পরেই বিতর্ক শুরু হয়। অনেকেই মনে করেন, ইরফান আসলে ধোনির প্রতি ব্যঙ্গ করে এমন মন্তব্য করেছিলেন। কারণ, ধোনির নাকি ব্যক্তিগত জীবনে হুঁকো টানার অভ্যাস ছিল বলেই দাবি করেন কিছু নেটিজেন।
মুহূর্তেই সোশাল মিডিয়া জুড়ে ছড়িয়ে পড়ে সেই ভিডিও। নেটিজেনরা নানা রকম প্রতিক্রিয়া জানাতে শুরু করেন। অনেকেই ইরফানের বক্তব্যকে “ধোনি বিরোধী মন্তব্য” বলে আখ্যা দেন। ফলে সমালোচনার ঝড় নামে প্রাক্তন অলরাউন্ডারের উপর।
যা-ই পোস্ট করছিলেন ইরফান, তার নীচে কমেন্ট বক্স ভরে যাচ্ছিল হুঁকো প্রসঙ্গ নিয়ে কটাক্ষে। সমালোচকদের একাংশ সরাসরি তাঁকে ধোনিকে ছোট করার চেষ্টা করার অভিযোগ তোলেন।
বিতর্ক বাড়তে থাকায় অবশেষে মুখ খুললেন ইরফান পাঠান। নিজের সোশাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এক্স-এ তিনি লেখেন—
“অর্ধেক দশক আগের একটি ভিডিও হঠাৎ করেই ছড়িয়ে দেওয়া হলো। তারওপর আমার মন্তব্যকে বিকৃত করে উপস্থাপন করা হচ্ছে। এটা কি ভক্তদের ইচ্ছাকৃতভাবে যুদ্ধে নামানোর চেষ্টা নয়?”
তিনি আরও স্পষ্ট করে দেন, তাঁর মন্তব্য ভুলভাবে ব্যাখ্যা করা হয়েছে। এমনকি সমালোচকদের উদ্দেশ্যে পাল্টা জবাব দিয়ে বলেন, “আমি আর ধোনি একসঙ্গে বসে হুঁকো টানব।” অর্থাৎ ধোনির সঙ্গে তাঁর কোনও ব্যক্তিগত সমস্যা নেই।
তবে উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো, এর আগে ২০০৮ সালে ভারতীয় দলে থেকে বাদ পড়ার পর ইরফান প্রকাশ্যে অভিযোগ করেছিলেন, তাঁর বাদ পড়ার নেপথ্যে ধোনির ভূমিকা ছিল। সেই অভিযোগের পর থেকেই ধোনি-ইরফান সম্পর্ক নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠেছিল। নতুন করে ভাইরাল হওয়া মন্তব্য যেন আবার সেই পুরনো বিতর্ককে সামনে নিয়ে এলো।
ক্রিকেট মহলের একাংশ মনে করছেন, পুরনো বিষয়কে সামনে এনে অকারণে বিতর্ক বাড়ানো হচ্ছে। একজন ক্রিকেটার হিসেবে ইরফান পাঠান ভারতীয় দলে তাঁর অবদান রেখেছেন, আর ধোনি ভারতীয় ক্রিকেট ইতিহাসের অন্যতম সফল অধিনায়ক। ফলে ব্যক্তিগত বিষয় টেনে এনে বিতর্ক তৈরি করাটা অনেকেই অযৌক্তিক বলে মনে করছেন।
‘হুঁকো বিতর্ক’ নিয়ে সোশাল মিডিয়ায় এখনও তর্ক-বিতর্ক থামেনি। ইরফান পাঠানের বক্তব্যকে কেন্দ্র করে ধোনিকে নিয়ে সমালোচনা শুরু হলেও, তিনি স্পষ্ট করেছেন যে, ক্যাপ্টেন কুলের সঙ্গে তাঁর কোনও বিরোধ নেই। বরং পরিস্থিতিকে শান্ত করতেই তিনি এমন মন্তব্য করেছেন।
শেষমেশ এটুকু বলা যায়—ভারতীয় ক্রিকেটের দুই তারকাকে ঘিরে হুঁকো বিতর্ক হয়তো চটজলদি থামবে না। তবে ইরফানের সাম্প্রতিক বক্তব্যে অন্তত পরিষ্কার যে, মাঠের বাইরের বিষয় নয়, বরং মাঠের খেলাতেই তাঁর নজর ছিল এবং থাকবে।