কলকাতার ফুটবলপ্রেমীদের কাছে মোহনবাগান-ইস্টবেঙ্গল ডার্বি শুধু একটি ম্যাচ নয়, বরং আবেগ, গর্ব ও ইতিহাসের লড়াই। মঙ্গলবার রাতে ডুরান্ড কাপের কোয়ার্টার ফাইনালে এই দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীর মুখোমুখি হওয়ার ঘোষণা হতেই সমর্থকদের মধ্যে শুরু হয়ে যায় টিকিট সংগ্রহের দৌড়।
ডুরান্ড কমিটি দ্রুত জানিয়ে দেয়, বৃহস্পতিবার সকাল ১১টা থেকে অনলাইনে টিকিট বিক্রি শুরু হবে। প্রতীক্ষার প্রহর গোনার পর বৃহস্পতিবার সকালেই দুই দলের সমর্থকরা লগইন করে টিকিট বুক করতে থাকেন। কিন্তু হতাশার বিষয়—টিকিট বিক্রির পোর্টাল খোলার কয়েক মিনিটের মধ্যেই স্ক্রিনে ভেসে ওঠে ‘Sold Out’।
টিকিট বিক্রি শুরু হওয়ার আগে থেকেই উত্তেজনা ছিল চরমে। জানা গিয়েছে, মোহনবাগান সমর্থকদের জন্য বি-৩ ব্লক এবং ইস্টবেঙ্গল সমর্থকদের জন্য ডি-৩ ব্লকের টিকিট অনলাইনে তোলা হয়েছিল। কিন্তু অভিযোগ, বহু সমর্থক চেষ্টা করেও টিকিট পাননি। অনেকেই জানান, লগইন করতেই সব টিকিট শেষ হয়ে যায়।
যারা অনলাইনে টিকিট পাননি, তাদের জন্য একটি আশা—১৬ আগস্ট সকাল ১১টা থেকে শুরু হবে অফলাইন বিক্রি। মোহনবাগান এবং ইস্টবেঙ্গল ক্লাব তাঁবু থেকে সীমিত সংখ্যক টিকিট বিক্রি হবে। প্রতি ব্যক্তির জন্য সর্বোচ্চ দুইটি টিকিট কেনা যাবে। এছাড়া, অনলাইনে বুক করা টিকিট রিডেম্পশন করা যাবে মহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের বক্স অফিস থেকে ১৪, ১৬ এবং ১৭ আগস্ট সকাল ১১টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত।
ইস্টবেঙ্গল কর্তা দেবব্রত সরকার জানান, “আমাদের ৫,০০০ প্রাইস টিকিট পাওয়ার কথা ছিল, কিন্তু প্রাক্তন ফুটবলার, স্পনসর এবং অন্যান্য সংস্থার জন্য আরও টিকিটের প্রয়োজন। তাই আমরা ডুরান্ড কমিটির কাছে অতিরিক্ত টিকিট চেয়েছি।” এই মন্তব্যের পর সমর্থকদের মধ্যে জল্পনা শুরু হয়—টিকিট কি কালোবাজারির ফাঁদে পড়তে যাচ্ছে?
আগের বছরগুলিতে ডুরান্ড ডার্বির টিকিট কালোবাজারে বিক্রির অভিযোগ উঠেছে। অনেক সমর্থক বৈধ পথে টিকিট না পেয়ে হতাশ হয়েছেন। এবারও সেই শঙ্কা রয়েছে। অনলাইনে মাত্র কয়েক মিনিটে টিকিট শেষ হওয়া এবং সীমিত অফলাইন সরবরাহ—সব মিলিয়ে সমর্থকদের মধ্যে ক্ষোভ ছড়িয়েছে।
সবকিছুর পরেও, ১৭ আগস্ট যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে গ্যালারি পূর্ণ থাকার সম্ভাবনা প্রবল। মোহনবাগান ও ইস্টবেঙ্গলের সমর্থকরা যে কোনও মূল্যে তাদের প্রিয় দলের জন্য গলা ফাটাতে হাজির হবেন, তা নিশ্চিত। ডার্বির উত্তাপ ইতিমধ্যেই শহরে ছড়িয়ে পড়েছে, আর বাকি সময়ের মধ্যে সেই উন্মাদনা আরও চড়বে।