ফুটবল বিশ্বে লিওনেল মেসির নাম মানেই জাদু। পায়ের ইনজুরির কারণে টানা ১৫ দিন মাঠের বাইরে থাকার পর আর্জেন্টাইন সুপারস্টার আবারও প্রমাণ করলেন কেন তিনি সময়ের সেরা খেলোয়াড়। ইনজুরি কাটিয়ে ফিরেই ইন্টার মিয়ামির জার্সিতে দারুণ পারফরম্যান্স করেন তিনি। গোল ও অ্যাসিস্টে দলকে ৩-১ ব্যবধানে জয় এনে দেন এমএলএসের নিয়মিত মৌসুমে লস অ্যাঞ্জেলস গ্যালাক্সির বিপক্ষে।
চেজ স্টেডিয়ামে ম্যাচের দ্বিতীয়ার্ধে বদলি খেলোয়াড় হিসেবে নামেন মেসি। খেলার তখন মাত্র ১০ মিনিট বাকি এবং স্কোরলাইন সমতায় (১-১)। এমন উত্তেজনাপূর্ণ মুহূর্তেই মেসি তার জাদুকরী ফুটবল কৌশলে বদলে দেন ম্যাচের চিত্র।
৮৪তম মিনিটে প্রতিপক্ষের অর্ধ থেকে বল কন্ট্রোল নিয়ে স্বাভাবিক ড্রিবলিংয়ের মাধ্যমে ডিফেন্ডারকে পরাস্ত করেন তিনি। এরপর পেনাল্টি বক্সের প্রান্ত থেকে বাঁ পায়ে নিখুঁত শটে বল পাঠান জালের নিচের কোণে। মিয়ামি এগিয়ে যায় ২-১ গোলে।
গোলের আনন্দের মাত্র পাঁচ মিনিট পরই মেসি আবারও আলোচনায় আসেন অ্যাসিস্ট দিয়ে। সতীর্থ রদ্রিগো ডি পলের পাস নিয়ন্ত্রণে নিয়ে মেসি চমৎকার হিল-পাস বাড়ান লুইস সুয়ারেজের উদ্দেশ্যে। সুয়ারেজ বল নিয়ন্ত্রণ করে গোল করতে কোনো ভুল করেননি। ফলে ৩-১ ব্যবধানে জয়ের পথে অগ্রসর হয় মিয়ামি।
এই ম্যাচে এমএলএস মৌসুমে প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে সরাসরি ৩০ গোলের সঙ্গে যুক্ত হলেন মেসি। তার মধ্যে রয়েছে ১৯ গোল ও ১১ অ্যাসিস্ট। এ সাফল্য তাকে গোল্ডেন বুট দৌড়ে আরও এগিয়ে দিয়েছে। আশ্চর্যের বিষয়, বেঞ্চ থেকে নেমে খেলা টানা চার ম্যাচেই গোল পেয়েছেন আটবারের ব্যালন ডি’অরজয়ী তারকা।
গ্যালাক্সির হয়ে ৫৯ মিনিটে জোসেফ পেইন্টসিল সমতায় ফিরিয়েছিলেন। তবে ম্যাচের শেষভাগে তারা মেসির আগুনে পারফরম্যান্স সামাল দিতে পারেনি। গত মৌসুমে এমএলএস কাপের চ্যাম্পিয়ন হলেও বর্তমানে ওয়েস্টার্ন কনফারেন্সের পয়েন্ট টেবিলে তারা নিচের দিকে অবস্থান করছে, যা তাদের দুর্বলতা স্পষ্ট করে।
এই ম্যাচে মিয়ামির তিনটি গোলই এসেছে সাবেক বার্সেলোনা তারকাদের কাছ থেকে। ৪৩ মিনিটে সার্জিও বুসকেটসের নিখুঁত থ্রু পাসে গোল করেন জর্দি আলবা। এরপর গোল ও অ্যাসিস্টে অবদান রাখেন মেসি এবং লুইস সুয়ারেজ। একসময় বার্সেলোনায় যাদের একসঙ্গে দেখা যেত, তারা এখন মিয়ামিতে আবারও জ্বলে উঠেছেন।
গত ২ আগস্ট লিগস কাপে নেকাক্সার বিপক্ষে খেলতে নেমেই ইনজুরিতে পড়েছিলেন মেসি। এরপর মিয়ামিকে তাকে ছাড়া খেলতে নেমে ৪-১ গোলে হারের স্বাদ পেতে হয় অরল্যান্ডো সিটির বিপক্ষে। তবে চোট কাটিয়ে ফেরার পর মেসি প্রমাণ করলেন—তিনি থাকলেই দল অন্যরকম অনুপ্রেরণা পায়।
লিওনেল মেসির প্রত্যাবর্তন শুধু ইন্টার মিয়ামির জন্য নয়, পুরো এমএলএসের জন্যই দারুণ বার্তা। গোল ও অ্যাসিস্টে তার অবদান দলকে শিরোপার লড়াইয়ে এগিয়ে রাখছে। ফুটবলবিশ্ব আবারও দেখল—মেসি এখনও সমানতালে আলো ছড়াচ্ছেন, বয়স তাকে থামাতে পারেনি।